মঙ্গলবার ১৫ জুলাই ২০২৫ - ২০:৪৪
আমেরিকা ও ইসরায়েলকে আলাদা ভাবা নিছক অজ্ঞতা ছাড়া কিছুই নয়: আয়াতুল্লাহ আরাকি

ইরানের প্রভাবশালী আলেম ও নীতিনির্ধারণী পরিষদের সদস্য আয়াতুল্লাহ মোহসেন আরাকি বলেছেন, ১২ দিনের সাম্প্রতিক প্রতিরোধযুদ্ধে আমেরিকা ও ইসরায়েলকে আলাদা করে দেখা নিছক অজ্ঞানতা, কারণ শুরু থেকেই আমেরিকা ইসরায়েলি অপরাধযজ্ঞের মূল সহযোগী।

হাওজা নিউজ এজেন্সি: দেশটির ধর্মীয় নগরী কোমের জাতীয় সম্প্রচার কেন্দ্রের (ছেদা ও সিমা) পরিচালনা পরিষদের বৈঠকে বক্তব্য দেন ইসলামী বিশেষজ্ঞ পরিষদের সদস্য ও শীর্ষস্থানীয় আলেম আয়াতুল্লাহ মোহসেন আরাকি। তিনি বলেন, সম্প্রতি ইসরায়েল তেহরানের সম্প্রচার ভবনের ওপর যেভাবে হামলা চালিয়েছে এবং সেখানে সংবাদকর্মী বেগম ইমামি ও সংশ্লিষ্ট সবার সাহসিকতা ছিল ইরানি জাতির প্রতিরোধপরিচয়ের প্রতিফলন—একটি পরিচয় যা আলী (আ.) ও হুসাইন (আ.)-এর পথ ও আদর্শ থেকে উৎসারিত।

তিনি বলেন, এই ১২ দিনের প্রতিরোধযুদ্ধে কোম শহরের জাতীয় সম্প্রচার কেন্দ্র দৃঢ়ভাবে জনমতকে সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে পরিচালিত করেছে এবং প্রোপাগান্ডা যুদ্ধের ভারসাম্য ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের দিকে ঘুরিয়ে দিয়েছে।

আয়াতুল্লাহ আরাকি বলেন, এই সময়টিতে গণমাধ্যমের ভূমিকাই গোটা বিশ্বের সামনে ইরানের প্রতিরোধ ও শক্তির পরিচয় তুলে ধরেছে। গণমাধ্যম কেবল বার্তা পরিবেশন করে না, বরং এটি পরিচয় নির্মাতা—এবং এর উদাহরণ রাসূল (সা.) ও আহলে বাইতের (আ.) যুগেও পাওয়া যায়।

তিনি বলেন, সাম্প্রতিক এই যুদ্ধ ইরানের ঐতিহাসিক প্রতিরক্ষা যুদ্ধের (দুঃস্থ ৮ বছরের ইরাক যুদ্ধ) তুলনায়ও কঠিনতর ছিল, কারণ এবার ইরান একাধারে আমেরিকা, ইসরায়েলসহ বৈশ্বিক ঔদ্ধত্যের মোকাবেলায় দাঁড়িয়ে সফলভাবে নিজের অবস্থান তুলে ধরেছে এবং প্রমাণ করেছে যে বিজয়ী পক্ষ তারাই।

তিনি আরও বলেন, ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের জনগণ, সশস্ত্র বাহিনী, সর্বোচ্চ নেতার নির্দেশনা এবং গণমাধ্যম—এই চারটি স্তম্ভ আজ আলবাহীন পরিচয়ের প্রতীক। এই পরিচয় ও শক্তিকে আরও বেশি তুলে ধরতে সত্যনিষ্ঠ গণমাধ্যমের অব্যাহত প্রয়াস দরকার।

তিনি বলেন, আমেরিকার পক্ষ থেকে যুদ্ধবিরতির অনুরোধই ইঙ্গিত করে যে শত্রুর শক্তি ভেঙে পড়েছে, এবং ইরানের বিজয় নিঃসন্দেহ। তাই আমেরিকা ও ইসরায়েলকে এই যুদ্ধে আলাদা করে দেখা অর্থহীন—কারণ শুরু থেকেই আমেরিকা ছিল ইসরায়েলের অপরাধে সক্রিয় সহযোগী।

বক্তব্যের এক পর্যায়ে তিনি বলেন, গণমাধ্যমের প্রভাব সমাজ ও বিশ্বমানসে প্রবল এবং ইসলামি হাওযাগুলোর জ্ঞানভাণ্ডার হলো সমগ্র ইসলামি বিশ্বের শ্রেষ্ঠতম সম্পদ। এই কারণে আমাদের গণমাধ্যমকে আরও ইসলামিক ও প্রভাবশালী করে তুলতে হবে।

এই সভায় কোম শহরের জাতীয় সম্প্রচার কেন্দ্রের মহাপরিচালক আহমাদ পেহলবানান হাওযা ও আলেম সমাজের সঙ্গে পারস্পরিক সহযোগিতা ও সংযোগ আরও বাড়ানোর আহ্বান জানান।

আপনার কমেন্ট

You are replying to: .
captcha